বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট সম্পর্কে যা জানতেই হবে

আপনি বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন। তাহলে একটি সুন্দর এবং ঝামেলামুক্ত ভ্রমণের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া খুবই জরুরি। বিশেষ করে যারা প্রথমবার বিদেশ যাচ্ছেন তাদের মনে প্রশ্ন ঘুরপাক খায়—কী কী কিনবো? কোন জিনিসটা ফেলে আসলে সমস্যা হবে?
বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট সম্পর্কে যা জানতেই হবে
এই আর্টিকেলে আমরা বিদেশ যাওয়ার জন্য একটি বিস্তারিত শপিং লিস্ট নিয়ে আলোচনা করবো। আমি চেষ্টা করবো যেন আপনারা সহজেই বুঝতে পারেন কীভাবে বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট প্রস্তুত করতে হই।

পেজ সুচিপত্রঃ বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট সম্পর্কে যা জানতেই হবে

ভ্রমণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আর্থিক প্রস্তুতি

বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কাগজপত্র এবং আর্থিক প্রস্তুতি। এগুলো ছাড়া আপনি এয়ারপোর্ট থেকে বের হতেই পারবেন না। তাই প্রথমে এই বিষয়ে ফোকাস করা দরকার।ভ্রমণের আগে পাসপোর্টের মেয়াদ চেক করে নিন। যদি বিদেশে যান। কিছু দেশে অন-অ্যারাইভাল ভিসা পাওয়া যায়।তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আগে থেকে আবেদন করতে হয়।এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র টিকিটের কপি হোটেল বুকিং-এর প্রমাণ আর ট্রাভেল ইনস্যুরেন্সের কাগজ সঙ্গে রাখা খুবই জরুরি। ইনস্যুরেন্সটা অনেকে হালকাভাবে নেন কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হলে বা লাগেজ হারিয়ে গেলে এটা আপনার বড় সহায়ক হতে পারে। এবার আসি আর্থিক প্রস্তুতির দিকে। ভ্রমণের বাজেট তৈরি করা মানে শুধু টিকিট আর থাকার খরচ হিসাব করা নয় খাবার ঘোরাঘুরি শপিং আর জরুরি খরচের জন্যও কিছু টাকা হাতে রাখতে হবে।

আমি সবসময় বলি বাজেটের চেয়ে ১০-১৫% বেশি টাকা রাখা ভালো কারণ অপ্রত্যাশিত খরচ এড়ানো যায় না। ব্যাংক কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড সঙ্গে রাখুন । তবে কিছু নগদ টাকাও রাখতে হবে। বিদেশে যাচ্ছেন? তাহলে গন্তব্য দেশের মুদ্রা আগে থেকে কিছুটা বদলে নিন। কিন্তু বেশি বদলাবেন না রেটের তারতম্যে লোকসান হতে পারে। আরেকটা জিনিস ব্যাংককে আগে থেকে জানিয়ে রাখুন বিদেশে কার্ড ব্যবহার করবেন তা না হলে বিপদে পড়তে পারেন। এছাড়ায় ভ্রমণের সময় ছোট একটা নোটবুকে খরচের হিসাব রাখলে বাজেটের বাইরে যাওয়ার ভয় কমে। আমার অভিজ্ঞতায়, এই ছোট ছোট প্রস্তুতিগুলো ভ্রমণকে আরও সহজ আর আনন্দময় করে। তাই ব্যাগ গোছানোর আগে এই কাগজপত্র আর আর্থিক ব্যাপারগুলো ঠিক করে নিন। তাতে দেখবেন মনটা অনেক হালকা থাকবে!

ভ্রমণে প্রয়োজনীয় পোশাক-পরিচ্ছদ সম্পর্কে জানুন

ভ্রমণে প্রয়োজনীয় পোশাক-পরিচ্ছদের সম্পর্কে ভালোভাবে আপনাকে জানতেই হবে। কেননা বিদেশ ভ্রমণের কথা মাথায় আসলেই যেন বুকের ভেতরটা একটু উত্তেজনায় কেঁপে ওঠে। কিন্তু এই উত্তেজনার মাঝেও ব্যাগ গোছানোর সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। যদি ঠান্ডার দেশে যান তাহলে থার্মাল ইনার ফ্লিস জ্যাকেট আর মোটা সোয়েটার বা কোট অবশ্যই লাগবে। আর যদি গরম দেশে যেতে চান তাহলে হালকা সুতির পোশাক যেমন টি-শার্ট -শর্টস বা লিনেন প্যান্ট প্যাক করুন। তবে একটা হালকা শাল বা স্কার্ফ সঙ্গে রাখুন কারণ শপিং মল বা রেস্তোরাঁয় এসি বেশি ঠান্ডা থাকতে পারে। পোশাকের পাশাপাশি আরামদায়ক জুতোর কথা ভুললে চলবে না। একজোড়া ভালো ওয়াকিং শু বা স্নিকার্স তো বটেই সঙ্গে একজোড়া স্যান্ডেল বা ফ্লিপ-ফ্লপ রাখুন। 

সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে একজোড়া ফরমাল জুতো বা পোশাক রাখা ভালো। এবার আসি অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কথায়। একটা ভালো ব্যাকপ্যাক বা ট্রাভেল ব্যাগ ছাড়া ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। আমি সবসময় হালকা ওয়াটার-রেজিস্ট্যান্ট ব্যাগ পছন্দ করি।বিদেশে এগুলো কিনতে গেলে দাম বেশি পড়তে পারে। টুথপেস্ট-ব্রাশ- শ্যাম্পু- সাবান- আর ময়েশ্চারাইজারের ছোট প্যাক এগুলো ছোট একটা কিট তৈরি করে রাখাই ভালো। সানস্ক্রিন আর লিপ বাম ভুলবেন না । আরেকটা জরুরি জিনিস হলো বিভিন্ন দেশে সকেটের ধরন আলাদা হয় তাই ইউনিভার্সাল পাওয়ার অ্যাডাপ্টার নিলে ভালো। একটা পাওয়ার ব্যাংক আর নিজের ফোনের চার্জার অবশ্যই প্যাক করুন। ছোট একটা ফার্স্ট এইড কিটে ব্যান্ডেজ পেইনকিলার আর প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন। 

আমি সবসময় একটা পুনর্ব্যবহারযোগ্য পানির বোতল আর কিছু ড্রাই ফ্রুট বা এনার্জি বার সঙ্গে রাখি। পোশাকের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন গন্তব্য দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে একটু জেনে নিন। কিছু দেশে খুব খোলামেলা পোশাক পরলে অস্বস্তি হতে পারে। তাই স্থানীয় রীতিনীতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে পোশাক বাছুন। শেষে একটা টিপস—ব্যাগে জায়গা বাঁচাতে পোশাক গুটিয়ে রাখুন। আর ভারী জিনিস নীচের দিকে রাখুন। এই ছোট ছোট প্রস্তুতি আপনার ভ্রমণকে আরও আরামদায়ক আর ঝামেলামুক্ত করে তুলবে। তাই শপিং লিস্ট তৈরি করে ফেলুন। আর নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ান।

প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস কেনাকাটা

বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট পরিকল্পনা করার সময় শুধু পোশাক বা কাগজপত্র নিয়েই ভাবতে হয় না। ইলেকট্রনিক গ্যাজেটসের কথাও মাথায় রাখতে হয়। আমার অভিজ্ঞতায় সঠিক গ্যাজেটস থাকলে ভ্রমণ অনেক সহজ আর আনন্দময় হয়। বিভিন্ন দেশে পাওয়ার সকেটের ধরন আলাদা হয় তাই একটা ইউনিভার্সাল পাওয়ার অ্যাডাপ্টার কেনা জরুরি। আর এই ছোট্ট গ্যাজেটটা আপনার ফোন ল্যাপটপ বা ক্যামেরার চার্জিং নিশ্চিত করবে। আমি সবসময় এমন অ্যাডাপ্টার কিনি যেটায় একাধিক ইউএসবি পোর্ট থাকে যাতে একসঙ্গে কয়েকটা ডিভাইস চার্জ করা যায়। এরপরে পাওয়ার ব্যাংক—এটা যেন ভ্রমণের বেস্ট ফ্রেন্ড।

 দিনভর ঘোরাঘুরির সময় ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে গেলে পাওয়ার ব্যাংকই আপনাকে বাঁচাবে। আমি ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক সাজেস্ট করি। ফোনের চার্জার আর টাইপ-সি বা লাইটনিং কেবল অবশ্যই প্যাক করুন। কেবল হঠাৎ নষ্ট হয়ে যেতে পারে তাই আমি একটা অতিরিক্ত কেবল রাখি।আরেকটা জরুরি গ্যাজেট হলো ইয়ারফোন বা হেডফোন। লম্বা ফ্লাইটে বা বাস যাত্রায় নয়েজ-ক্যানসেলিং হেডফোন থাকলে যেন জীবন বদলে যায়। সাধারণত ওয়্যারলেস ইয়ারবাড বহন করা সহজ আর তারের ঝামেলা নেই। 

যদি ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন তাহলে একটা ভালো ক্যামেরা বা স্মার্টফোনের জন্য লেন্স কিট কিনে নিতে পারেন। তবে ক্যামেরা নিলে অতিরিক্ত মেমোরি কার্ড আর ব্যাটারি নিতে ভুলবেন না। আরেকটা ছোট কিন্তু কাজের গ্যাজেট হলো পোর্টেবল ওয়াই-ফাই রাউটার সাথে নিবেন। এছাড়া একটা ছোট টর্চ বা হেডল্যাম্প রাখা ভালো বিশেষ করে ক্যাম্পিং বা গ্রামের দিকে যাচ্ছেন। সবশেষে গ্যাজেটসের জন্য একটা ছোট অর্গানাইজার ব্যাগ কিনুন। যেখানে সব কেবল চার্জার আর ছোট ডিভাইস গুছিয়ে রাখা যায়। এই প্রস্তুতি নিলে দেখবেন ভ্রমণের সময় টেকনোলজি আপনার পক্ষে থাকবে।

বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্বাস্থ্য সামগ্রী কেনাকাটা

বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট এর মধ্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্বাস্থ্য সামগ্রী কেনাকাটা গুরুত্ব অপরসিম।বিদেশ ভ্রমণের আনন্দে মেতে ওঠার আগে স্বাস্থ্যের দিকটা একটু ঠিকঠাক করে নেওয়া খুব জরুরি। আমি সবসময় বলি একটা ছোট ফার্স্ট এইড কিট থাকলে অনেক ঝামেলা থেকে বাঁচা যায়। প্রথমেই যেটা প্যাক করবেন সেটা হলো ব্যক্তিগত ওষুধ। যদি আপনার কোনো নিয়মিত ওষুধ থাকে তাহলে পুরো ট্রিপের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নিন। এছাড়া পেইনকিলার জ্বরের ওষুধ আর ডায়রিয়ার ওষুধ রাখা জরুরি। বিদেশে খাবার বা পানির কারণে পেটের সমস্যা হতেই পারে। আমি সবসময় ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচতে ওআরএস প্যাকেট রাখতে সাজেস্ত করি।
বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট সম্পর্কে যা জানতেই হবে
 ব্যান্ডেজ অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম আর কটন প্যাডের মতো ছোট জিনিসও কিটে রাখুন। এগুলো ছোট কাটাছেঁড়া বা ফোসকার জন্য খুব কাজে আসে।এবার আসি স্বাস্থ্য সামগ্রীর কথায়। সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম তো এখন প্রায় সবাই ব্যবহার করে। দেশের আবহাওয়া বুঝে এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি ক্ষমতার সানস্ক্রিন কিনুন। গরম দেশে যাচ্ছেন তো ময়েশ্চারাইজার আর লিপ বাম ভুলবেন না। আমি সবসময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার আর মাস্ক পাবলিক ট্রান্সপোর্ট থেকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাঁচাই তাই ছোট প্যাকেট রাখি। 

 এয়ারপোর্ট বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে এগুলো জীবন বাঁচায়। ভেজা টিস্যু বা ওয়াইপসও খুব কাজের, বিশেষ করে লম্বা ফ্লাইটে রিফ্রেশ হতে। যদি পাহাড়ে বা উঁচু জায়গায় যান, তাহলে মাথাব্যথা বা অক্সিজেন কমার সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ নিন। জ্বর হলে তা দ্রুত বোঝার জন্য একটা ছোট থার্মোমিটার রাখা ভালো। সহজে পাওয়া জন্য সব মিলিয়ে এই সামগ্রীগুলো একটা ছোট জিপলক ব্যাগে গুছিয়ে রাখুন।

ভ্রমণে প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত দ্রব্য সামগ্রী কেনাকাটা

ভ্রমণে যাওয়ার শপিং লিস্ট পরিকল্পনা করার সময় ব্যক্তিগত দ্রব্য সামগ্রীর একটা লিস্ট তৈরি করলে অনেক ঝামেলা এড়ানো যায়। আমি সবসময় বলি ছোট ছোট জিনিসই ভ্রমণকে আরামদায়ক করে তোলে। প্রথমেই বলি টয়লেট্রিজের কথা। একটা ছোট কিটে টুথব্রাশ টুথপেস্ট শ্যাম্পু কন্ডিশনার বডি ওয়াশ আর ফেসওয়াশের ট্রাভেল সাইজ প্যাক নিন। বিদেশে এগুলো কিনতে গেলে দাম বেশি পড়ে ।আর সব জায়গায় পছন্দের ব্র্যান্ড পাওয়া যায় না। একটা ছোট তোয়ালে বা ফেস ক্লথ রাখা খুব কাজে আসে। নেইল কাটার শেভিং কিট বা হেয়ার ব্রাশের মতো জিনিসও ভুলবেন না। 

মেয়েদের জন্য স্যানিটারি প্যাড বা ট্যাম্পনের ছোট প্যাকেট রাখা জরুরি। আরেকটা জিনিস হলো ডিওডোরেন্ট বা পারফিউমের ছোট বোতল—লম্বা ফ্লাইট বা গরম আবহাওয়ায় এটা রিফ্রেশ রাখে। এছাড়া একটা ছোট মেকআপ ব্যাগে লিপস্টিক কাজল বা ফাউন্ডেশনের মিনি সাইজ প্যাক রাখুন।এবার অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসের কথা বলি। একটা পুনর্ব্যবহারযোগ্য পানির বোতল অবশ্যই কিনুন। এয়ারপোর্টে বা ঘোরাঘুরির সময় পানির বোতল কিনতে গেলে খরচ বাড়ে। আর পরিবেশের জন্যও এটা ভালো। আমি সবসময় কিছু ড্রাই ফ্রুট বিস্কুট বা এনার্জি বার সঙ্গে রাখি। 

একটা ছোট নোটবুক আর কলম রাখা ভালো—জরুরি। নোট ঠিকানা বা খরচের হিসাব লিখতে কাজে আসে। যদি বই পড়তে ভালোবাসেন, তাহলে একটা পাতলা বই বা ই-বুক রিডার প্যাক করুন। আর হ্যাঁ, একটা হালকা শাল বা স্কার্ফ রাখুন—এটা ঠান্ডা ফ্লাইটে কম্বল হিসেবে বা মন্দির-মসজিদে ঢোকার সময় ব্যবহার করা যায়। সানগ্লাস আর ক্যাপও লিস্টে রাখুন। বিশেষ করে গরম দেশে যাচ্ছেন।এই সব জিনিস গুছিয়ে রাখার জন্য একটা ছোট অর্গানাইজার ব্যাগ কিনুন। এতে জিনিসপত্র হারানোর ভয় কমে।এতে আপনি পুরোপুরি নতুন জায়গার মজা উপভোগ করতে পারবেন।

বিদেশ যাওয়ার সময় লক্ষণীয় জরুরি বিষয়গুলি

বিদেশ যাওয়ার কথা ভাবলেই মনটা উড়তে শুরু করে। নতুন শহর অচেনা রাস্তা আর রঙিন সংস্কৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু এই উত্তেজনার মাঝে একটু অসতর্ক হলেই স্বপ্নের ট্রিপটা ঝামেলায় ভরে যেতে পারে। তাই আমি আজ আপনাদের সঙ্গে কিছু জরুরি কথা শেয়ার করব। যা মাথায় রাখলে আপনাদের ভ্রমণ হবে নিরাপদ আর আনন্দময়।শুধুই মজার আর স্মৃতিগুলো থাকবে চিরকালের জন্য ।নিচে বিদেশ যাওয়ার সময় লক্ষণীয় জরুরি বিষয়গুলি আলোচনা করা হল ।
  • পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস আছে কি না দেখে নিতে হবে। অনেক দেশে এটা বাধ্যতামূলক। ভিসার কাগজপত্র ঠিকঠাক জমা দিতে হবে। একটা ছোট ভুলও বড় ঝামেলা করতে পারে।
  • বিদেশে হঠাৎ অসুস্থ হলে বা লাগেজ হারালে এই ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স আপনাকে বাঁচাবে।
  • যে দেশে যাবে সেখানকার আবহাওয়া পোশাকের নিয়ম আর সংস্কৃতি আগেই সম্পর্কে জানতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে গেলে খোলামেলা পোশাক এড়িয়ে চলো।
  • সব টাকা ক্যাশে নিয়ে ঘুরো না। একটা ইন্টারন্যাশনাল কার্ড রাখবেন। আর কিছু স্থানীয় মুদ্রা ছোট নোটে হাতে থাকুক। টাকা আলাদা আলাদা জায়গায় রাখবেন যাতে হারালেও সব না যায়।
  • বিমানবন্দর বা ব্যস্ত জায়গায় পকেটমারদের থেকে সাবধান। দামি জিনিস বা গ্যাজেট লাগেজে রাখলে চোখ রাখবেন।
  • পাসপোর্ট ভিসা হোটেল বুকিং—এগুলোর স্ক্যান কপি ইমেইল বা ক্লাউডে রাখবেন। হারিয়ে গেলেও এগুলো কাজে আসবে।
  • অনেক দেশে ছোট ভুল যেমন জনসমক্ষে ধূমপান বা ছবি তোলা বড় জরিমানার কারণ হতে পারে।

বিদেশ যাওয়ার প্যাকিং টিপস ও ট্রিকস জানুন

ভ্রমণে যাওয়ার শপিং লিস্ট পরিকল্পনাই প্যাকিং টিপস ও ট্রিকসএর গুরুত্ব অপরসিম। সুটকেস প্যাক করার সময় মাথায় ঘুরতে থাকে—কী নেব । প্যাকিং টিপস জানা থাকলে আপনার ভ্রমণ হবে ঝামেলামুক্ত আর মজাদার। প্রথমেই জরুরি জিনিস লিখে হালকা প্যাক করো। জায়গা বাঁচাতে পোশাক রোল করে রাখবেন। সহজে পাওয়ার জন্য জরুরি কাগজপত্র—পাসপোর্ট ভিসা হোটেল বুকিং—হ্যান্ডব্যাগে রাখবেন । তরল জিনিস যেমন শ্যাম্পু জিপলক ব্যাগে প্যাক করবেন। 

যে দেশে জাবেন আবহাওয়া চেক করে পোশাক নিবেন।ঠান্ডার দেশে গেলে জ্যাকেট ভুলবেন না। শপিংয়ের জন্য একটা ফোল্ডেবল ব্যাগ রাখবেন ।এবার কিছু ট্রিকস। ভারী জিনিস সুটকেসের নিচে রাখবেন যাতে ব্যাগ টানতে সুবিধা হয়। বিমানবন্দরের লাগেজ নিয়ম আগে জেনে নাও—ওজন বেশি হলে জরিমানা গুনতে হতে পারে। আমার এক বন্ধু ওজন না চেক করে বিমানবন্দরে হয়রান হয়েছিল। ইলেকট্রনিক গ্যাজেট যেমন চার্জার বা পাওয়ার ব্যাঙ্ক হ্যান্ডব্যাগে রাখবেন। 

একটা ছোট ফার্স্ট এইড কিট নাও—ব্যান্ডেজ পেইনকিলার আর নিয়মিত ওষুধ রাখো। দামি জিনিস যেমন গয়না হ্যান্ডব্যাগে রাখো চুরির ঝুঁকি এড়াতে। আর সুটকেসে নাম-ঠিকানার ট্যাগ লাগাও হারালে ফিরে পাওয়া সহজ হবে। প্যাকিং শেষে ব্যাগ ওজন করে নাও যাতে বিমানবন্দরে ঝক্কি না পোহাতে হয়। এই টিপস আর ট্রিকস মানলে তোমার প্যাকিং সহজ হবে । আর তুমি পুরো মন দিয়ে বিদেশের রঙিন মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে পারবে।

বিদেশে কেনাকাটার পদ্ধতি জেনে নিন

বিদেশে কেনাকাটার কথা ভাবলেই চোখে ভাসে চকচকে দোকান রঙিন বাজার আর নতুন নতুন জিনিস। বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট এর মধ্যে বিদেশে কেনাকাটা খুবি রিক্স বিষয় । কিন্তু আপনি যদি একটু সতর্ক না হন তাহলে কেনাকাটা ঝামেলার কারণ হতে পারে। আগে যে দেশে যাচ্ছেন সেখানকার মুদ্রা আর টাকার রেট জেনে নিন। ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা সহজ । তবে কার্ডের ফরেন ট্রানজাকশন ফি চেক করুন। বিখ্যাত শপিং জায়গা যেমন দুবাইয়ের মল বা ব্যাংককের বাজার আগে থেকে খুঁজে নিন। স্থানীয় বাজারে দরদাম করা যায়। তবে হাসিমুখে কথা বলুন। 
বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট সম্পর্কে যা জানতেই হবে
আরেকটা সুযোগ হলো ট্যাক্স-ফ্রি শপিং। অনেক দেশে পর্যটকদের ভ্যাট ফেরত দেয়। আমি জার্মানিতে একটা ঘড়ি কিনে ১০% ফেরত পেয়েছিলাম। তাই দোকান থেকে ট্যাক্স-ফ্রি ফর্ম আর রিসিপ্ট নিন।কেনাকাটার সময় একটু চালাকি করলে মজা বাড়ে। জিনিস কেনার আগে দুই-তিন দোকানে দাম দেখুন। বড় মলে দাম নির্দিষ্ট কিন্তু ছোট দোকানে দরদামে ছাড় পাওয়া যায়। নকল জিনিস থেকে সাবধান—ব্র্যান্ডেড জিনিস কিনতে হলে বিশ্বস্ত দোকান বেছে নিন। 

আপনার লাগেজের ওজনও মাথায় রাখুন বিমানের ওজন সীমা পার হলে বাড়তি টাকা লাগবে। আমি একবার লন্ডন থেকে এত কেনাকাটা করেছিলাম। বিমানবন্দরে জরিমানা দিতে হয়েছিল। স্থানীয় হস্তশিল্প বা ছোট স্মৃতিচিহ্ন কিনুন। নিষিদ্ধ জিনিস যেমন প্রাচীন জিনিস কিনবেন না—আইনি ঝামেলা হতে পারে। আর সব রিসিপ্ট রাখুন জিনিস ফেরত বা সমস্যায় কাজে আসবে। এই সহজ টিপস মানলে আপনার বিদেশে কেনাকাটা মজার হবে। বাজেটের মধ্যে আর ব্যাগ ভরবে সুন্দর স্মৃতি দিয়ে।

বিদেশ ভ্রমণে শেষ কথা

বিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট তৈরি করা একটু সময়সাপেক্ষ হলেও এটি আপনার ভ্রমণকে অনেক সহজ এবং আনন্দদায়ক করে তুলবে। কাগজপত্র, পোশাক, গ্যাজেট, ওষুধ, এবং প্যাকিং—সবকিছুতে একটু মনোযোগ দিলে অপ্রত্যাশিত সমস্যা এড়ানো যায়। আমি আশা করি, এই গাইড আপনার প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে। যদি আপনার বন্ধু বা পরিবারের কেউ বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করে, তাহলে এই লিস্টটি তাদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

শুভ ভ্রমণ!নবাবিদেশ যাওয়ার শপিং লিস্ট তৈরি করা একটু সময়সাপেক্ষ হলেও এটি আপনার ভ্রমণকে অনেক সহজ এবং আনন্দদায়ক করে তুলবে।বিদেশ ভ্রমণ শুধু নতুন জায়গা দেখা নয় ।এটা একটা জীবন্ত গল্প যেখানে তুমি নিজেই নায়ক।নতুন সংস্কৃতি মানুষ আর অভিজ্ঞতার মাঝে হারিয়ে যাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু এই আনন্দ পুরোপুরি উপভোগ করতে চাই একটু প্রস্তুতি।পাসপোর্ট ভিসা ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স থেকে শুরু করে স্মার্ট প্যাকিং আর কেনাকাটার পরিকল্পনা—সবকিছু মিলিয়ে আপনার ট্রিপ হবে ঝামেলামুক্ত। 

আমার এক বন্ধু থাইল্যান্ডে প্ল্যান ছাড়া গিয়ে লাগেজের ওজন নিয়ে হয়রান হয়েছিল। তাই আগে সব জেনে নাও। স্থানীয় নিয়ম মানো মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলো আর ছোট ছোট মুহূর্তগুলো মন ভরে উপভোগ করো। বিদেশের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একটা নতুন খাবার চেখে বা অচেনা কারো সঙ্গে গল্প করে যে স্মৃতি তৈরি হবে। সেটাই তোমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমি আশা করি এই গাইড আপনার প্রস্তুতিতে খুবই সাহায্য করবে। এই রকম আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট এর সাথেই থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাফল্য 24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন-প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url